করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা: ‘দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় চাই সম্মিলিত উদ্যোগ’
রুদ্রবার্তা২৪.নেট: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৫ নভেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জুম অ্যাপের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, জেলা পুলিশ, র্যাবসহ জেলার বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ সংযুক্ত ছিলেন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সভায় অধিকাংশ বক্তার বক্তব্যে এই বিষয়টি উঠে এসেছে। এছাড়া মাস্ক পরিধানে সর্বসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং জনবহুল স্থানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে প্রশাসনিক উদ্যোগের বিষয়টি আলোচিত হয়েছে সভায়। আসন্ন বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্যবিধির দিকেও খেয়াল রাখার প্রতি নজর দেওয়া হয়েছে।
করোনা মোকাবেলায় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সংস্থাকে সমন্বয় করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) রেক্টর মো. রকিব হোসেনও সভায় সংযুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘জনবহুল স্থানসমূহ যেমন, মার্কেট, বিপণী-বিতান, হাট-বাজারে সাধারণ মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তাই মোবাইল কোর্ট চালাতে হবে। ইউএনওরা এ বিষয়ে লক্ষ রাখবেন। সামনে ১৬ ডিসেম্বর (বিজয় দিবস) আছে সেখানেও স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি আপনারা সবাই লক্ষ রাখবেন। এ বিষয়ে সবাই মিলে একটি ফোরাম করবো। সেই ফোরামটি জুম অ্যাপের মাধ্যমে চাইলে তাদের মধ্যে করোনার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা ও বিভিন্ন বিষয়ে একে অপরের মতামত নিতে পারে।’
সভায় জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা আসছে তার মধ্যে অন্যতম, একটি হলো, নো মাস্ক, নো এন্ট্রি। এই বিষয়ে যদি জনসাধারণে সচেতনতা বাড়ানো যায় তাহলে করোনা মোকাবেলায় কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। পাশাপাশি শহরে ঢুকতেই বড় বড় বিলবোর্ড ও এলইডি মনিটর চোখে পড়ে সেখানে এ বিষয়ে প্রচারণা চালাতে হবে। যাতে করে বিষয়টি মানুষের সামনে দৃশ্যমান হয়। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি উপজেলাতেও যাতে করে এরকম প্রচারণা প্রতিনিয়ত থাকে সে বিষয়ে ইউএনওদের ও কাজ করতে হবে।’
জুম অ্যাপে সংযুক্ত হয়ে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় শুরু থেকে আমাদের যে সকল কার্যক্রম ছিল তা এখনও চলমান। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে যদি আমাদের পার্টিসিপেশনেরও প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা সেটির জন্যও প্রস্তুত রয়েছি। বিশেষ করে গণপরিবহন ও জনবহুল স্থানসমূহ যেমন গার্মেন্টসগুলোর যে শ্রমিকরা আছে এরা অনেকেই কারখানার আশেপাশে মাস্ক ছাড়া চলাচল করে এ বিষয়টি আমরা লক্ষ করেছি। আমাদের টহলরত টিম এরকম কাউকে দেখলে তাদের স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মনে করিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবার জন্য সদা প্রস্তুত রয়েছি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শফিউল ইসলাম বলেছেন, ‘করোনার সংক্রমণ প্রতিদিন বাড়ছে। এখনই যদি আমরা এ বিষয়ে প্রস্তুতি না নেই তাহলে পরে আমাদের আফসোস করে লাভ হবে না। এর আগে করোনা মোকাবিলায় নারায়ণগঞ্জ যেভাবে কাজ করেছে সেভাবে আবারও যদি সমন্বয় করে আমরা কাজ করতে পারি আশা করি করোনার দ্বিতীয় ঢেউও মোকাবিলা করতে পারবো। আমি মনে করি এর জন্য একটা কাজ করা যেতে পারে সেটা হলো সকলের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা। এবং আমরা বিগত সময়ে লক্ষ্য করেছি করোনার সময়ে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব। আমরা যদি এ বিষয়গুলো নিয়ে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করি তাহলে আমরা করোনা মোকাবিলায় সফল হবো।’
এ সময় জুম অ্যাপের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন, নাসিকের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা। জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসাপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. গৌতম রায়, জেলা সিভিল সার্জন ড. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম বেপারী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী, বিকেএমইএ’র সহসভাপতি (অর্থ) মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল, নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন প্রমুখ।